স্বামী যদি স্ত্রীর সাথে না থাকার জন্য সিদ্ধান্ত নেয়, তবে চার মাস অপেক্ষা করবে
এর মধ্যে যদি তারা মিলে যায় তাহলে তালাক হবে না। আর যদি তালাক দেওয়ার সংকল্প বজায় থাকে, তাহলে প্রথম তালাক কার্যকর হবে।
যারা স্ত্রীর সাথে সহবাস না করার শপথ করে, তাদের জন্যে চার মাসের ছাড় রয়েছে। এর মধ্যে যদি তারা স্ত্রীর কাছে ফিরে যায়, তবে নিশ্চয়ই আল্লাহ অতীব ক্ষমাশীল, পরমদয়ালু। আর যদি তারা তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আল্লাহ সব শোনেন, সব জানেন। ২:২২৬-২২৭
তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী তিন রজঃস্রাব কাল বা তিন মাস অপেক্ষা করবে
যদি এর মধ্যে তারা আপোষ নিষ্পত্তিতে পুনরায় একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে তারা আবার সংসার শুরু করতে পারবে। কোন তালাক হবে না।
কিন্তু যদি এই সময়সীমার মধ্যে পুনঃগ্রহণের কোনো সিদ্ধান্ত না নেয়, তবে দ্বিতীয় বার তালাক হয়ে গেল। সংসার করতে না চাইলে এই সাত মাস পর তালাক পূর্ণরূপে কার্যকর হয়ে যাবে। যার কোন তৃতীয় নেই।
তালাকপ্রাপ্তা স্ত্রী পুনরায় বিয়ের জন্যে তিন রজঃস্রাবকাল অপেক্ষা করবে। তারা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাসী হলে তাদের গর্ভে আল্লাহ যা সৃষ্টি করেছেন, তা গোপন রাখা বৈধ নয়। যদি তারা আপসে মিলে থাকতে চায়, তাহলে এ সময়ের মধ্যে স্বামীরা তাদেরকে পুনরায় স্ত্রী হিসেবে ঘরে নিয়ে যেতে পারবে। পুরুষদের ওপর এ ব্যাপারে নারীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার রয়েছে, তেমনি পুরুষদেরও অধিকার আছে নারীদের ওপর। তবে এ-ক্ষেত্রে পুরুষের সুযোগ একটু বেশি। আল্লাহ সর্বশক্তিমান, প্রজ্ঞাময়।
এ তালাক দুবার, (দ্বিতীয় বার তালাক দেয়া হলে) এরপর হয় স্ত্রীকে ভালোভাবে রাখবে অথবা সদয়ভাবে বিদায় দেবে। আর স্ত্রীকে যা-কিছু দিয়েছ তা থেকে কোনোকিছু ফেরত নেয়া তোমাদের জন্যে বৈধ নয়। অবশ্য যদি তারা দুজনেই আশঙ্কা করে যে, তারা আল্লাহপ্রদত্ত সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না এবং তোমরাও যদি মনে করো যে, এরা আল্লাহর সীমারেখা রক্ষা করে চলতে পারবে না, তাহলে স্ত্রী কোনোকিছুর বিনিময়ে নিষ্কৃতি পেতে চাইলে এর মধ্যে দূষণীয় কিছু নেই। এটি আল্লাহ-নির্ধারিত সীমারেখা। তাই তোমরা এই সীমা লঙ্ঘন কোরো না। আসলে সীমালঙ্ঘনকারীরাই জালেম। ২:২২৮-২২৯
নারীরাও তালাক নেওয়ার অধিকারী
আর কোনো স্ত্রী যদি তার স্বামীর কাছ থেকে দুর্ব্যবহারের আশঙ্কা করে বা নিজেকে উপেক্ষিত মনে করে তখন তারা দুজনে মিলে আপস-নিষ্পত্তি করতে চাইলে কোনো অসুবিধা নেই। আসলে শান্তিপূর্ণ আপস-নিষ্পত্তি সবসময়ই ভালো। তবে মানুষের প্রবৃত্তি সাধারণভাবেই স্বার্থপর, লোভাতুর। আর জেনে রাখো, তোমরা আল্লাহ-সচেতন হয়ে নিঃস্বার্থভাবে অন্যের জন্যে কিছু করলে আল্লাহ অবশ্যই তার খবর রাখেন। ৪:১২৮
*** শুধু শুধু মুখে তালাক বলার কোন মূল্য নেই (২/২২৫)
*** সিদ্ধান্ত যাচাইয়ের জন্যে উভয়কে(স্বামী স্ত্রী) চার মাস অপেক্ষা করতে হবে (২/২২৬)
*** যদি উভয়ের ভুল বুঝাবুঝি মিটে (মিমাংসা) যায় তবে বিবাহ অটুট থাকবে (২/২২৬)
*** যদি তালাকের সিদ্ধান্তে উভয়ে অটল থাকে তাহলে তালাক (২/২২৭)
এরপরে, তালাক প্রাপ্তানারী স্বামী হতে নিজেকে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে তিন হায়েজকাল অপেক্ষা করবে (হায়েজ হয়নি এবং হায়েজ বন্ধ হওয়া নারীদের ইদ্দাত তিন মাস ৬৫/৪), তিন হায়েজকালের মধ্যে স্বামী স্ত্রী পুনরায় একত্রিত হতে চাইলে একত্রিত হওয়ার অধিকারী। নয়তো তালাক।(২/২২৮)
২/২২৬,২২৭,২২৮ প্রক্রিয়াই দুই বার (২/২২৯) তালাকের পরেও স্ত্রী ফেরত নেওয়া যাবে (২/২৩১), কিন্ত তৃতীয়বার তালাক সম্পন্ন (২/২২৬,২২৭,২২৮) হলে অন্যের সঙ্গে বিয়ে এবং পরবর্তী স্বামীর দ্বারা তালাক ব্যতিরেকে স্ত্রীকে পুনরায় গ্রহন করা যাবে না (২/২৩০) (২/২৩২)।
গর্ভবতী নারীদের ইদ্দত সন্তান প্রসব কাল পর্যন্ত (৬৫/৪)।
বিবাহের পরে স্পর্শ(সহবাস) করার পূর্বে তালাকের মনস্থির করলে পবিত্রতা অর্জনের জন্যে গননার (তিন হায়েজকাল) ইদ্দত নেই (৩৩/৪৯), শুধু অপেক্ষা করতে হবে অবকাশের চার মাস (২/২২৬)।
বিধবা নারীদের সিদ্ধান্তের অবকাশ (২/২২৬) নেই,শুধুমাত্র নিজেকে পবিত্র করার জন্যে চার মাস দশ দিন ইদ্দত (২/২৩৪) পালন।
তালাক ব্যবস্থায় সাক্ষী আবশ্যিক (৬৫/২)।
হে নবী! (বিশ্বাসীদের বলো) তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের তালাক দিতে চাইলে তাদের ইদ্দতের প্রতি লক্ষ রেখে তালাক দিও। সঠিকভাবে ইদ্দতের হিসাব রেখো আর আল্লাহ-সচেতন থেকো। তিনিই তোমাদের প্রতিপালক। প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত না হলে তাদেরকে ঘর থেকে বের করে দিও না এবং এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি কোরো না যেন তারা বের হয়ে যায়। এই হচ্ছে আল্লাহর বিধান। যে আল্লাহর বিধান লঙ্ঘন করে, সে নিজের ওপরই জুলুম করে। (কারণ হে মানুষ!) তুমি জানো না (তালাক চূড়ান্ত হওয়ার আগেই) হয়তো আল্লাহ (ভুল বোঝাবুঝি অবসানের) কোনো উপায় করে দেবেন।
যখন তাদের ইদ্দতকাল প্রায় শেষ হয়ে আসবে, তখন হয় তাদের স্ত্রী হিসেবে ভালোভাবে রেখে দেবে অথবা সম্মানজনকভাবে বিবাহবন্ধন থেকে মুক্ত করে দেবে। তোমাদের মধ্য থেকে দুজন ন্যায়পরায়ণ লোককে (তোমাদের সিদ্ধান্তের) সাক্ষী রাখবে। আর সাক্ষীরা আল্লাহকে স্মরণে রেখে সাক্ষ্য দেবে। যারা আল্লাহ ও আখেরাতে বিশ্বাস করে, তাদের জন্যেই এ উপদেশ। যারা আল্লাহ-সচেতন থাকে, আল্লাহই তাদের ঝামেলা ও অশান্তি থেকে বেরোনোর পথ করে দেন। আর অপ্রত্যাশিত উৎস থেকে জীবনোপকরণ দান করেন। যে আল্লাহর ওপর নির্ভর করে আল্লাহই তার জন্যে যথেষ্ট। আল্লাহ তাঁর অভিপ্রায় বাস্তবায়িত করবেনই। আল্লাহ সবকিছুরই একটা মেয়াদ ও মাত্রা নির্দিষ্ট করে রেখেছেন।
তোমাদের যে-সব স্ত্রীর ঋতুমতী হওয়ার আশা নেই, তাদের ইদ্দত সম্পর্কে যদি কোনো সন্দেহ জাগে তবে জেনে রাখো, তাদের ইদ্দত হবে তিন মাস। যারা এখনো রজঃস্বলা হয় নি, তাদের ইদ্দতকালও তিন মাস। আর গর্ভবতীদের ইদ্দতকাল সন্তান প্রসব পর্যন্ত। মনে রেখো, আল্লাহ-সচেতনদের জন্যে তিনি তাঁর বিধান পালনকে সহজ করে দেন। এই হচ্ছে আল্লাহর বিধান, যা তিনি তোমাদের ওপর নাজিল করেছেন। যে ব্যক্তিই আল্লাহ-সচেতন থাকবে, তিনি তার পাপমোচন করবেন এবং মহাপুরস্কারে ভূষিত করবেন।৬৫:১-৫
মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রিধারী তথাকথিত আলেম মোল্লারা নাকি সমাজে পূজনীয়!! আল্লাহর আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে তারা যে কত হাজার হাজার ঘর ভাঙতেছে আর অবৈধ জীবন যাপনে বাধ্য করতেছে তার কোন ইয়ত্তা নাই!!!
মুখে একবার কেন শত কোটি বার তালাক তালাক বললেও তালাক হবে না, যদি না আল্লাহর নির্ধারিত স্তরগুলো অতিক্রম করা হয়!! মুখে তালাক বললাম, আর তালাক হয়ে যাবে এমন ঠুনকো সিস্টেম আল্লাহ দেননি!!